nulibrary

সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভার (১৯৪৬-৪৭) গঠন ও কার্যক্রম পর্যালোচনা কর।

Reading Time: 1 minute

অথবা, সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভার (১৯৪৬-৪৭) গঠন ও কার্যক্রম ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ভূমিকা : ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে ব্রিটেনে না সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে শ্রমিক দল জয়লাভ করে। ইংল্যান্ডের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৪৬ সালে স ভারতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলার ইতিহাসে ১৯৪৬ সালের মার্চে প্রাদেশিক নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ নির্বাচনে সুমুসলিম লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করেন। সোহরাওয়ার্দীর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১২১টি আসনের মধ্যে মুসলিম লীগ ১১৪টি আসন লাভ করে। অতঃপর সোহরাওয়ার্দী পার্লামেন্টারি দলের নেতা নির্বাচিত হয়। ১৯৪৬ সালের ২৪ এপ্রিল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন।

→ মন্ত্রিসভার গঠন : ১৯৪৬ সালের ২৪ এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী ৮ সদস্যের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেন । এ ৮ জনে সদস্যের মধ্যে ৭ জন ছিলেন মুসলিম দলীয় এবং ১ জন তফসিলী হিন্দু। এ মন্ত্রিসভার সদস্যগণ হলেন-

১. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বসহ।

 ২. আহমদ হোসাইন কৃষি ।

৩. খান বাহাদুর আবুল গোফরান- বেসামরিক সরবরাহ।

৪. খান বাহাদুর মুহাম্মাদ আলী অর্থ জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার।

৫. খান বাহাদুর মোয়াজ্জেদ্দিন হোসাইন শিক্ষা ও রাজস্ব।

 ৬. খান বাহাদুর এ এফ এম আবদুর রহমান সমবায় ও সেচ ।

৭. শামসুদ্দিন আহমদ বাণিজ্য, শ্রম ও শিল্প ।

৮. যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল বিচার পূত গৃহনির্মাণ ।

এ মন্ত্রিসভায় ৪ জন প্রাক্তান মন্ত্রি ও ৪ জন খান বাহাদুর খেতাবধারী অন্তর্ভুক্ত হলেও মূলত এই মন্ত্রিসভা সমাজের মধ্যবিত্ত স্বার্থেরই প্রতিনিধিত্ব করে। উল্লেখ্য ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পর প্রথমবারের মতো বাংলায় একটি মন্ত্রিসভা গঠিতে ১ যাতে ঢাকার নবাব পরিবারের কেউ অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এছাড়া প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নাজিউদ্দিনের অনুসারী কেউ মন্ত্রিসভায় স্থান প্র পায়নি। এরা সকলেই সোহরাওয়ার্দীর অনুসারী ছিলেন। যাহোক, ক্ষ মন্ত্রিসভা গঠন করে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কিছু আসন মা * খালি রেখেছিলেন এই প্রত্যাশায় যে, কংগ্রেসের অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে যু একটি সমঝোতা হলেও হতে পারে। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি ে তখন তিনি খাজা নাজিমউদ্দিন গ্রুপের প্রতি কিছুটা নমনীয় হন। রা তাছাড়া খাজা নাজিমউদ্দিন দেখলেন যে জিন্নাহ কিছুতেই স

সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগের কথা বলছেন না। তখন তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাথে তার অনুসারীদের যাতে দূরত্ব না বাড়ে সেদিকে সচেষ্ট হন। ফলে ১৯৪৬ সালের নভেম্বর মাসে সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করেন। এতে খাজা নাজিমউদ্দিন গ্রুপের প্রভাবশালী সদস্য ও প্রাক্তন চিপ হুইপ  ফজলুর রহমান মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন। খাজা সদস্যের অপর সদস্য নূরুল আমিনকে স্পিকার নির্বাচিত করা হয়। এছাড়াও ১৩ জন খাজা নাজিমউদ্দিনের গ্রুপ থেকে নেয়া হয় ।

→ সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভা কার্যাবলি : সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভা ১৫ মাস ক্ষমতায় ছিল। এ সময় তাদের পক্ষে কোনো উল্লেখযোগ্য কোনো আইনগত বিধান রচনা করা সম্ভব হয়নি। ঠিক এ সময় তেভাগা আন্দোলন শুরু হয়। তারা তেভাগা আন্দোলনকে সমর্থন করে কৃষকদের স্বার্থের কথা মনে রেখে আইন সভায় বেঙ্গল বর্গাদার (প্রভিশনাল) কন্ট্রেল বিল নামে একটি বিল উত্থাপন করে। কিন্তু মুসলিম লীগের জোড়দার সদস্যদের বিরোধিতার কারণে তা পাশ করা সম্ভব হয়নি। শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের শাসনামলে গঠিত ফ্রাউড কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করার উদ্দেশ্য এপ্রিল মাসে আইনসভায় তোলা হলেও বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তা আইনে পরিণত করা সম্ভব হয়নি। প্রকৃতপক্ষে সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভার কার্যকাল ছিল বাংলা ও ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে ক্রান্তিকাল। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবমান দেশ বিভাগ ও পাকিস্তান সৃষ্টিকে কেন্দ্র করে এই অধ্যায়ের রাজনীতি আবর্তিত হয়। এই সময় কলকাতায় ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং দাঙ্গা রোধে সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভার ব্যর্থতা; স্বাধীন অখন্ড বাংলা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আনেদালন ইত্যাদি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলার রাজনীতিতে সোহরাওয়ার্দীর অবস্থান প্রশ্নে সম্মুখীন হয় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত সময়কাল বাংলার রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। এ সময় বাংলার রাজনীতিতে মুসলমানদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কালপর্বে চারটি মন্ত্রিসভা বাংলায় ক্ষমতাসীন হয়। তবে ৪টি মন্ত্রিসভার মধ্যে ফজলুল হকের প্রথম মন্ত্রিসভা ছাড়া অন্যকোন মন্ত্রিসভা তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ও । যুগান্তকারী ভূমিকা পালতে করতে পারেনি। এ সময় । সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভাকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে উদ্ভূত । রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে নিয়োজিত হতে হয়।

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.
© Copyright 2024 - aowlad - All Rights Reserved
magnifier linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram