― Advertisement ―

spot_img

বাংলার ইতিহাস (১৯০৫-১৯৪৭) পরীক্ষা-২০১৭

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (ইতিহাস বিভাগ) বিষয় কোড : 241503 বিষয় : বাংলার ইতিহাস (১৯০৫-১৯৪৭) ক-বিভাগ (ক) ক্ষুদিরাম কে ছিলেন? উত্তর : ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম দিকের সর্বকনিষ্ট এক বিপ্লবী ছিলেন। (খ) কখন...
Homeবাংলার ইতিহাসঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কারণগুলো আলোচনা কর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কারণগুলো আলোচনা কর।

অথবা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কারণগুলো আলোচনা কর।

অথবা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস লিখ।

অথবা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল সংক্ষেপে আলোচনা কর।


উত্তর : ভূমিকা : বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল বাঙালি জাতির জন্য একটি গৌরবজনক অধ্যায়। বাংলার মানুষের জ্ঞান পিপাসা মেটাতে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি। কিন্তু এর প্রতিষ্ঠার পিছনে রয়েছে নানা বাধা-বিঘ্ন, চড়াই-উৎরাই পেরুনো এক বর্ণাঢ্য ইতিহাস । যা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গুরুত্বের আসনে আসীন করেছে।

→ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস : নিম্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস আলোচনা করা হলো :

১. প্রতিষ্ঠার কারণ : ভারতবর্ষে শিক্ষাদীক্ষা ছড়িয়ে পড়লেও বঙ্গভঙ্গের পূর্ব পর্যন্ত বাংলার শিক্ষাদীক্ষায় সরকার তেমন দৃষ্টিপাত করেনি। সব স্কুল কলেজ ও শিক্ষাসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান ছিল কলকাতা

ও তার আশেপাশে। বঙ্গভঙ্গের পর পূর্ববাংলার সাধারণ জনগণের শিক্ষা নিয়ে আলোচনা উঠে আসে এবং সেই সময় এদেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সরকার।

২. সরকারের নিকট প্রস্তাব : ১৯০৬ সালে নওয়াব সলিমুল্লাহ নওয়াব আব্দুল লতিফসহ বাংলার প্রথিতযশা শিক্ষিত প্রভাবশালী মহল ইংরেজ সরকারের নিকট পূর্ব বাংলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করেন। সেমতে নতুন প্রদেশ গভর্নর স্যার ব্যামফিল্ড কুলার একটি পরিকল্পনাও হাতে নেন। কিন্তু ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হলে বাংলার মুসলমানরা বৈষম্যের শিকার হয় এবং যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকায় এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেন।

৩. হিন্দুদের বিরোধিতা : ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারত সরকার থেকে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সরকারি ঘোষণা দেওয়া হলে কলকাতার হিন্দু সংবাদপত্র, বুদ্ধিজীবী ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের তীব্র বিরোধিতা শুরু করে। বাংলার চাষাভূষাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অর্থহীন বলে সংবাদপত্র, সভা-সমিতি, সেমিনারে উপহাস করতে থাকে। বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে অনড় থাকে ।৪. নাথান কমিশন গঠন : ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য অধ সরকার ২৭ মে ১৯১২ সালে রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে একটি কমিটি  গঠন করেন । যাকে বলা হয় নাথান কমিশন। এই কমিশন ঢাকায়  একটি আঞ্চলিক ও আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের রূপরেখা  প্রণয়ন করে সুপারিশ করে। তবে সরকারে অর্থ বরাদ্দে ঘাটতি ও নস বিশ্বযুদ্ধের কারণে প্রতিষ্ঠার কাজে বিলম্ব ঘটে।

৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা : ১৯১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভায় উত্থাপিত হলে ১৯২০ সালে রে সেটিকে আইনে পরিণত করা হয়। এই আইনের বলে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্র প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর স্যার ফিলিপ জি হার্টজ-এর হাত ধরে সৈ বাংলার আপামর জনতার স্বপ্নের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনার ফলে এটি সারা পূর্ব বাংলার জ্ঞান- বিজ্ঞানের কেন্দ্রভূমি হয়ে ওঠে।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা জানতে বি পারি যে, বঙ্গভঙ্গের ফলে পূর্ব বাংলার মতো বিশাল অংশে বি সরকারের দৃষ্টিপাত ঘটে এবং এর মাধ্যমেই এখানে একটি  বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের চিন্তার সূত্রপাত ঘটে। বঙ্গভঙ্গ রদের পরে বাঙালি মুসলমানদের ভাঙ্গা মনের ক্ষত সারাতে হিন্দুদের বিরোধিতা সত্ত্বেও অবশেষে ১৯২১ সালে ঢাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীকালে এ বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নে যখন যেভাবে  প্রয়োজন সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। নীতিতে, শিক্ষায়, আদর্শে আজও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে নি মাথা উঁচু করে সগর্বে অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে ।