― Advertisement ―

spot_img

বাংলার ইতিহাস (১৯০৫-১৯৪৭) পরীক্ষা-২০১৭

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (ইতিহাস বিভাগ) বিষয় কোড : 241503 বিষয় : বাংলার ইতিহাস (১৯০৫-১৯৪৭) ক-বিভাগ (ক) ক্ষুদিরাম কে ছিলেন? উত্তর : ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম দিকের সর্বকনিষ্ট এক বিপ্লবী ছিলেন। (খ) কখন...
Homeবাংলার ইতিহাসশিক্ষাক্ষেত্রে এ. কে. ফজলুল হকের অবদান মূল্যায়ন কর।

শিক্ষাক্ষেত্রে এ. কে. ফজলুল হকের অবদান মূল্যায়ন কর।

অথবা, শিক্ষাক্ষেত্রে একে ফজলুল হকের অবদান লিখ৷


উত্তর : ভূমিকা : ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এই দশ বছর বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । একে ফজলুল হক ছিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের জনক। তিনি বাংলার শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রযাত্রায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। তিনি বাঙালি জাতির মুক্তির উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। একে ফজলুল

হক মনে করেন যে, শিক্ষা ছাড়া বাঙালি জাতির উন্নয়ন ও মুক্তি সম্ভব নয়। এজন্য তিনি অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রি ও শিক্ষামন্ত্রি ম থাকা অবস্থায় এদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।

→ শিক্ষাক্ষেত্রে একে ফজলুল হকের অবদান : নিম্নে শিক্ষাক্ষেত্রে একে ফজলুল হকের অবদান বর্ণনা করা হলো-

১.বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা : একে ফজলুল হক একজন শিক্ষানুরাগী মানুষ ছিলেন। নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী ফজলুল হক ক্ষমতা গ্রহণ করেই প্রথমে প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করেন। এজন্য তিনি প্রাথমিক শিক্ষা আইন অনুসারে স্কুল বোর্ড গঠন করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক করার ফলে অনেক গরিব ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার সুযোগ লাভ করেছিল ।

২. আর্থিক প্রতিষ্ঠান গঠন : ১৯১২ সালে একে ফজলুল হক মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের জন্য বাংলার গভর্নরের কাছ থেকে বৃত্তি ও আর্থিক সাহায্যের পণ্য মেন্টাল ন্যাশনাল মোহামেডান এডুকেশনাল এসোসিয়েশন গড়ে তোলেন। তিনি ১৯২৪ সালে শিক্ষামন্ত্রি নিযুক্ত হলে মুসলিম এডুকেশন ফান্ড গঠন করে। এ দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য মুসলমানরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ |লাভ করতে আগ্রহী ভূমিকা পালন করে।

৩. মাধ্যমিক শিক্ষা বিল উত্থাপন : একে ফজলুল হক ১৯৪০ সালের ২০ আগস্ট মাধ্যমিক শিক্ষা বিল উত্থাপন করেন। কারণ পূর্বে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সমগ্র বাংলার  মাধ্যমিক শিক্ষা পরিচালিত হতো। কিন্তু তারা বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার দিকে তেমন গুরুত্ব দিত না। এজন্য তিনি আলাদা শিক্ষা বোর্ড গঠন করার কথা বলেন।

৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাস নির্মাণ : একে ফজলুল হক বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রবাস নির্মাণ করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বরিশালে চাখার কলেজ, আদিনা কলেজ, মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ অন্যতম। এছাড়া তিনি মুসলমানদের স্ত্রী শিক্ষার প্রসাবের জন্য কলকাতায় লেডি ব্রেবোন কলেজ ও ঢাকায় ইডেন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ছাত্রবাসের মধ্যে কলকাতার বেকার হোটেল, কারমাইকেল হোস্টেল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ছিল ।

৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবদান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যে সকল বাঙালি ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তাদের মধ্যে একে ফজলুল হক অন্যতম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের সাথে সাক্ষাৎ করেন । তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, একে ফজলুল হক শিক্ষা বিস্তারে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। তিনি ১৯২৪ সাল থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত যে কয়েকবার শিক্ষামন্ত্রি ও মুখ্যমন্ত্রি হওয়ায় প্রতিবারই শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নিজ দায়িত্বে রেখেছিলেন। ১৯০৬ সাল থেকে তিনি মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনের অন্যতম সংগঠন ছিলেন। শিক্ষা । বিস্তারে উল্লেখযোগ্য অবদানের কারণে বাংলার ইতিহাসে ফজলুল হক অমর হয়ে আছেন।