nulibrary

বেঙ্গল প্যাক্টের প্রধান ধারাগুলি কি কি?

Reading Time: 1 minute

বেঙ্গল প্যাক্টের প্রধান শর্তাবলি বর্ণনা কর। অথবা, বেঙ্গল প্যাক্টের ধারাগুলো আলোচনা কর।


উত্তর : ভূমিকা : ১৯২৩ সালের বেঙ্গল প্যাক্ট বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে হিন্দু, মুসলিম বিরোধ ছিল দীর্ঘদিনের। কিন্তু স্বাধিকার আন্দোলনের জন্য এ দুই সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়ন ছিল এক অপরিহার্য বাস্তবতা। গভীর আত্মোপলব্ধি থেকেই হিন্দু মুসলিম ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার সময়ে ১৯১৬ সালের বেঙ্গল প্যাক্ট, ১৯২০ সালের খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন গড়ে তোলে। বেঙ্গল প্যাক্ট ছিল হিন্দু মুসলমান দ্বন্দ্ব নিরাময়ের এক উদারনৈতিক পদক্ষেপ। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের একান্ত উদ্যোগ প্রচেষ্টায় ও বেঙ্গল প্যাক্ট নামক হিন্দু, মুসলিম, ঐক্যের ঐতিহাসিক চুক্তিটি রচিত হয়েছিল।

→ ১৯২৩ সালের বেঙ্গল প্যাক্টের ধারাসমূহ : ১৯২৩ সালের বেঙ্গল প্যাক্ট বা বঙ্গীয় চুক্তির প্রধান প্রধান ধারা বা শর্তসমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো :

১. আইনসভা গঠন : এ চুক্তিতে বলা হয় বঙ্গীয় আইনসভায় হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে জনসংখ্যার ভিত্তিতে

২. প্রতিনিধি নির্বাচন : এ চুক্তির ধারা অনুযায়ী বঙ্গীয় আইনসভায় ১৯০৯ সালের আইন প্রবর্তিত পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা  অব্যাহত থাকবে। অর্থাৎ আইনসভার প্রতিনিধিত্ব নির্ধারিত স্বতন্ত্র নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে হবে

৩. স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান : স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে  সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের শতকরা ৬০ ভাগ এবং সংখ্যালঘিষ্ঠ সম্প্রদায়ের শতকরা ৪০ ভাগ প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

৪. চাকরিতে সমতা : সরকরি পদসমূহের শতকরা ৫৫ ভাগ পূরণ করবে মুসলমান সম্প্রদায় এবং যতদিন পর্যন্ত ঐ সংখ্যায় না পৌঁছাবে ততদি পর্যন্ত শতকরা ৮০ ভাগ সরকারি মুসলমানদের জন্য নির্ধারিত থাকবে ।

৫. সরকরি চাকরি : চাকরির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সমতা অর্জনের পর থেকে মুসলমান জনগণ চাকরির শতকরা ৪৫ ভাগ পাবে এবং অমুসলমানগণ শতকরা ৪৫ ভাগ পাবে এবং অন্তর্বর্তীকলীন সময় হিন্দু জনগণ ২০ ভাগ চাকরি পাবেন ।

৬. ধর্মীয় অনুভূতি : ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে, এমন কোন আইন সংসদে পাস করা যাবে না। ধর্ম সংক্রান্ত আইন পাস করতে হলে আইনসভায় নির্বাচিত – অংশ

সদস্যদের সমর্থন থাকতে হবে।

৭. ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা : বলা হয় এ চুক্তিতে কোনো মসজিদ মুস অতিক্রম করার সময় কোন শোভাযাত্রা সঙ্গীত বা বাদ্যযন্ত্র বাজানো নিষিদ্ধ । কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মুসলমানদের গো-হত্যা নিষেধ করা যাবে না । তবে উন্মুক্ত স্থানে তা না করাই ভালো। এ চুক্তির প্রায় সবগুলো শত আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের অনুকূলে ছিল । চিত্তরঞ্জন দাস আইনসভায় বলেন, স্বরাজ্যের বুনিয়াদ রচনা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। স্বরাজ লাভের পর আমাদের সরকার না = মুসলমান সরকারে না হিন্দু সরকার এরূপ কোন সংশয় মতে । আমাদের মনে জাগ্রত না হয় সেজন্য আমরা এ চুক্তিতে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রাপ্য অংশ নির্ধারণ করি

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার হিন্দু মুসলিম  রাজনৈতিক ও সামাজিক সহযোগিতা স্থাপনের ক্ষেত্রে বেঙ্গল  প্যাক্টের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এ চুক্তিতে মুসলমানদের প্রতি  সদাচরণ, ন্যায্য অধিকার, ধর্মীয়ভাবে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়। চিত্তরঞ্জন দাসের শর্ত টিকিয়ে রাখলে সৃষ্টি হতো না হিন্দু মুসলিম দু'টি সাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদের ।

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.
© Copyright 2024 - aowlad - All Rights Reserved
magnifier linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram