জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
(বিএ (অনার্স) চতুর্থ বর্ষ; পরীক্ষা-২০১৮ (অনুষ্ঠিত-১০/০৪/১৯))
(ইতিহাস বিভাগ)
বিষয় কোড : 241503
বিষয় : বাংলার ইতিহাস (১৯০৫-১৯৪৭)
ক-বিভাগ
(ক) ১৯০৫ সাল বাংলার ইতিহাসে কেন বিখ্যাত?
(Why is the year 1905 famous in the history of Bengal ? )
উত্তর : বঙ্গভঙ্গের জন্য।
(খ) মুসলীম লীগ কোথায় গঠিত হয়?
(Where the Muslim League was formed ? )
উত্তর : ঢাকার শাহবাগে ।
(গ) ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কে হন?
(Who became the Chief Minister of Bengal after the election of 1937?)
উত্তর : এ কে ফজলুল হক।
(ঘ) নবাব সলিমুলাহ্ কে ছিলেন?
(Who was Nabab Solimullah ?)
উত্তর : ঢাকার নবাব ও মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন
সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভায় মুসলিম লীগ সদস্য কত জন ছিল?
(How many members of Muslim League were in the Cabinet of Suhrawardy?) উত্তর : ৭ জন।
(চ) অখণ্ড বাংলার পরিকল্পনার মূল প্রবক্তাদের নাম উল্লেখ কর।
(Mention the names of the main founders of the plan of the Undivided Bengal.) উত্তর : সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাসিম, শরৎ বসু কিরণ রায় প্রমুখ ।
(ছ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর কে ছিলেন?
(Who was the First Vice-Chancellor of Dhaka University?)
উত্তর : ড. পি. জে, হার্টজ।
(জ) গান্ধীকে ‘মাহাত্মা' উপাধিতে ভূষিত করেন কে?
(By whom Gandhi was called Mahatma?)
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
(ঝ) ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত বাংলায় কয়টি মন্ত্রিসভা ছিল?
(How many cabinet where there in Bengal from 1937 to 1947?)
উত্তর : চারটি ।
(ঞ) কখন ভারত ছাড় আন্দোলন শুরু হয়?
(When the Quit India Movement was started?)
উত্তর : ১৯৪২ সালে ।
(ট) ঐতিহাসিক 'লাহোর প্রস্তাব' উত্থাপিত হয় কত সালে?
(When was the historical "Lahore Resolution" presented?)
উত্তর : ১৯৪০ সালে ।
(ঠ) ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় কে ছিলেন?
(Who was the last Viceroy of British-India?)
উত্তর : লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন।
খ-বিভাগ
(Write down in brief the causes of the partition of Bengal in 1905.)
অথবা, বঙ্গভঙ্গ কেন করা হয়?
অথবা, বঙ্গভঙ্গের কারণ কি ছিল?
উত্তর :
ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। উনবিংশ শতকের দিকে ব্রিটিশ সরকার নিবেদিত জাতীয়তাবাদকে দমনের জন্য ভেদনীতি প্রয়োগের চেষ্টা করে। এই উদ্দেশ্যে তাঁরা আলীগড় আন্দোলনের প্রতি সদয় মনোভাব দেখায়। কিন্তু জাতীয় কংগ্রেস তার ফলে দমিত না হয়ে নিয়মতান্ত্রিক পথে আন্দোলন চালাতে থাকে। লর্ড কার্জন ভারতের বড়লাট হয়ে আসার পর জাতীয় কংগ্রেসের শান্তিপূর্ণ সমাধিদান করার সংকল্প নেন । এজন্য লর্ড কার্জন বাংলাকে বিভক্ত করার হীনচক্রান্তে লিপ্ত হন ও ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ করেন।
→ বঙ্গভঙ্গের কারণ : ঐতিহাসিক ও বিশ্লেষরা বঙ্গভঙ্গের কারণ হিসাবে দু'টি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তারা ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তির প্রশাসনিক কারণকে বঙ্গভঙ্গের মুখ্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। নিম্নে বঙ্গভঙ্গের কারণসমূহ বর্ণনা করা হলো :
১. প্রশাসনিক কারণ : রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ মনে করেন, বঙ্গভঙ্গের প্রধান কারণ হলো প্রশাসনিক কারণ। লর্ড কার্জন প্রথম থেকেই তাকে প্রথম শ্রেণির প্রশাসনিক সংস্কার নামে অভিহিত করেছেন। J. R Make জোর দিয়ে বলেছেন বঙ্গভঙ্গের পিছনে প্রশাসনিক সুবিধার বিষয়টি জড়িত। কেননা বাংলা ছিল বিশাল প্রদেশ। আয়তন ছিল ১ লক্ষ ৮৯ হাজার বর্গমাইল । ফলে শাসনভার ছিল কষ্টসাধ্য । এজন্য বঙ্গভঙ্গ করা হয়।
২. কংগ্রেসের শক্তি দুর্বলতা : ১৮৮৫ সালে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভারতীয় জনগণের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। বঙ্গভঙ্গ যখন প্রস্তাব করা হয় কংগ্রেস তখন থেকেই এর বিরোধিতা করে। কার্জন বিশ্বাস করতেন কলকাতায় কিছু ষড়যন্ত্রকারী আমার বিরুদ্ধে কংগ্রেসে চালাতো । কাজেই কলকাতায় গুরুত্ব কমিয়ে কর্মকাণ্ডের বিকল্প কেন্দ্র উৎসাহ দিলেই কঙগ্রেস দুর্বল হয়ে পড়বে
৩. অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ : ব্রিটিশ শাসন আমলে যত উন্নয়ন হতো সবই ভারতের রাজধানী কেন্দ্রিক। এতে অন্যান্য অঞ্চলসমূহ অর্থনৈতিক উন্নয়ন হতে বঞ্চিত হতো, এতে করে বৈষম্য হতো অনেক। এ সকল বৈষম্য দূরীকরণে বঙ্গভঙ্গ করা হয় যাতে উন্নয়ন সর্বত্র সমান হয় ।
৫. সরকারি চাকরিতে সমস্যা : তৎকালীন হিন্দু বর্ণের -তা উচ্চশ্রেণিরা চাকরির ক্ষেত্রে অত্যধিক সুবিধা পেত। এক্ষেত্রে গা মুসলিম জনগণ বঞ্চিত হচ্ছিল। এতে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা কটা খারাপ হয়ে পড়ে। চাকরিতে মুসলমানদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করার জন্য বঙ্গভঙ্গ করা হয়।
৬. পাটের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্য : পূর্ব বাংলায় পাট উৎপাদন হতো বেশি কিন্তু পাটকল ছিল না, অধিকাংশ পাটকল ছিল কলকাতায় ও হুগলিতে। এজন্য পূর্ব বাংরার মানুষ পাটের ন্যায্য মূল্য পেত না। এজন্য মুসলমানরা বঙ্গভঙ্গের পক্ষে ছিল। বঙ্গভঙ্গ করার পর পাটের ন্যায্যমূল্য পেত পূর্ব বাংলার জনগণ ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের প্রাচীনতম কারণ ছিল প্রশাসনিক কারণ। মূলত শাসনতান্ত্রিক সুবিধা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ও হিন্দু কংগ্রেসবাদীদের প্রভাব কমানোই এর মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল। যদিও বঙ্গভঙ্গের কারণে পূর্ব বাংলার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত ও পশ্চিম বাংলা কলকাতার দ্বারা শোষিত হতো তা রোধ করা সম্ভব হয়। তবে শেষ পর্যন্ত উগ্রবাদী হিন্দুদের তীব্র আন্দোলনে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হয় ।