নিয়ামক আইন ব্যাখ্যা কর।

Reading Time: 1 minute

অথবা, নিয়ামক আইন বলতে কী বুঝ?

ভূমিকা : ১৬০০ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠিত হয়। রাজকীয় সনদের মাধ্যমে এ কোম্পানি ভারতবর্ষে ব্যবসা- বাণিজ্যের জন্য আসে এবং ধীরে ধীরে সীমিত পরিষ্কার নিয়মনীতি প্রণয়ন, সামরিক বাহিনী গঠন, গভর্নর নিয়োগ, মুদ্রা জারী করতে সক্ষম হয় বিভিন্ন সনদের মাধ্যমে। কিন্তু ধীরে ধীরে কোম্পানি বেপরোয়া হয়ে ওঠলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্ট প্রাথমিক পর্যায়ে দুটি আইন প্রণয়ন করেন। যার মধ্যে দ্বিতীয় আইনটি হচ্ছে ‘রেগুলেটিং এ্যাক্ট ১৭৭৩' বা নিয়ামক আইন, ১৭৭৩ ।

→ নিয়ামক আইন : ১৭৭০ সালে বাংলায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এ সময় কোম্পানি কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ধীরে ধীরে জনমত গড়ে ওঠতে থাকে। এর মধ্যে কোম্পানি আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে। কোম্পানি এ সময় ব্রিটিশ সরকারের কাছে ১ মিলিয়ন পাউন্ড ঋণ আদেন করলে কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ সময় পার্লামেন্ট একটি সিলেক্ট কমিটি গঠন করে এবং কোম্পানির সার্বিক অবস্থা ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে রিপোর্ট তৈরি করতে বলে। তদন্ত কমিটি ১৭৭৩ সালে পার্লামেন্টের নিকট একটি রিপোর্ট পেশ করে। এ রিপোর্টে কোম্পানির দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা ফুটে ওঠে। তাই ব্রিটিশ সরকার আইনের মাধ্যমে কোম্পানির কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেন। এ সময় প্রথমে কোম্পানিকে ১৪ লক্ষ পাউন্ড ঋণ দেওয়া হয় এবং বার্ষিক ৪ লক্ষ পাউন্ড প্রদানের আইনি স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের ৬% এর বেশি মুনাফা প্রদান নিষিদ্ধ হয়। এ সময় কোম্পানির শাসন সংস্কারের জন্য প্রধানমন্ত্রী লর্ড নর্থ পার্লামেন্ট রেগুলেটিং এ্যাক্ট বা আইন হাউস অব কমন্স এবং হাউস অব লর্ডসে প্রেরণ করে। আইনটি ১৭৭৩ সালের ১৯ জুন পাস হয়। আর এ আইনকে নিয়ামক আইন বলা হয় ।

নিয়ামক আইনের শর্তাবলি : নিয়ামক আইনের মাধ্যমে কোম্পানির কার্যক্রম ও শাসন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয় । নিম্নে নিয়ামক আইনের শর্তাবলির মাধ্যমে যে পরিবর্তন হয় তা তুলে ধরা হলো :

১. ইংল্যান্ডে অবস্থিত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাংগঠনিক কাঠামো এবং ভারতবর্ষে অবস্থিত কোম্পানির শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তনের ব্যবস্থা করা হয়।

২. ভারতবর্ষের কোম্পানি অধীনস্থ বিভিন্ন এলাকাকে একটি

কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে নিয়ে আসা হয় ।

৩. ভারতে কোম্পানি শাসনব্যবস্থার উপর ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

উল্লিখিত পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারতের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ইংল্যান্ড সরকারের অধীনে নিয়ে আসা হয়।

উপসংহার : সার্বিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ভারত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উপর ইংল্যান্ড সরকারের নিয়ন্ত্রণ  প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে ঋণ প্রদান করা হয় এবং পরবর্তীতে নিয়ামক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ কার্যকর ইংরেজ সরকার। যার মাধ্যমে কোম্পানির কার্যকলাপ ও শাসন প্রক্রিয়ার সংস্কার সাধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ কারণে আইনকে  নিয়ন্ত্রণকারী আইন বা নিয়ামক আইন বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.

You may find almost every type of National University information here, including NU news, NU admissions information, NU results, and NU exam schedules.
Our goal is to aid NU students by offering information.
© Copyright 2022 - aowlad - All Rights Reserved
magnifierchevron-down linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram